বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুর শহরের পৌর এলাকার ভাটি লক্ষীপুর কুমার নদের পাড়ের বড় একটি অংশ হঠাৎ করেই ধসে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে এ এলাকার নদী তীরের একটি অংশ দেবে যায়। রবিবার সন্ধ্যার দিকে বিকট শব্দে নদী পাড়ের একটি অংশ ধসে গেলে সেখানে থাকা ১০টি বসত বাড়ী ও বেড়িবাঁেধর ৩শ মিটার রাস্তা বিলিন হয়। পাকা রাস্তার বেশকিছু অংশ ধসে যাওয়ায় চুনাঘাটা-কবি জসীমউদদীন সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেড়িবাঁধের একটি অংশ ধসে যাওয়ায় সেখানকার বাসিন্দাদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, ফরিদপুর কুমার নদ খননের জন্য নদ থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়। নদের মাটি নদের তীরে ফেলার কথা থাকলেও তা না করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগীতায় সেই মাটি বিক্রি করে দেয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ফলে নদ খননের পর নদের পাড়ের বিভিন্ন স্থান ঝুঁিকপূর্ন হয়ে পড়ে। গত মাসে অতিবৃষ্টির ফলে নদীপাড়ের বিভিন্ন স্থানে ফাটলের সৃষ্টি হয়। নভেম্বর মাসের শুরুতে লক্ষীপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে বড় আকারের কয়েকটি ফাটল দেখা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতংকের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করলে তাদের জানানো হয় বিষয়টি দেখবে পৌর কতৃপক্ষ। গত কয়েকদিন ধরে লক্ষীপুর এলাকার নদের পাড়ের পাকা রাস্তাসহ বড় একটি অংশ দেবে যায়। স্থানীয়রা লাল পতাকা টানিয়ে সেখান দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। একটি সাথে ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেননি। গত কয়েকদিন ধরে ফাটলের অংশটি কিছুটা করে দেবে যেতে থাকে। রবিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই ধসে যায় একটি অংশ। ধসের কারনে ভাটি লক্ষীপুর এলাকার কুমার নদের পাড়ের মীর আলমাস, রহিম শেখ, ফিরোজ খান, করিম মোল্যা, মনসুর শেখ, মোহাম্মদ আলী, জাকির হোসেন ও করিম শেখের বসত বাড়ী বিলিন হয়ে যায়। একই সাথে প্রায় ৩শ মিটার পাকা সড়ক ধসে গেছে। হঠাৎ করে বসত বাড়ী ও রাস্তা ধসে যাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। অনেকেই তাদের ঘর বাড়ীর মালামাল সরিয়ে নিতে পারেননি। বর্তমানে ভাঙ্গন এলাকায় যারা রয়েছেন তারা তাদের বাড়ী ঘরের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন। বসত বাড়ী হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মীর আলমাস, রহিম শেখ, করিম মোল্যাসহ স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, অপরিকল্পিত ভাবে কুমার নদ খনন করা এব নদের মাটি বিক্রি করে দেবার কারনেই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হলেও তারা কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশকিছু দিন ধরেই কুমার নদের বিভিন্ন অংশে সড়ক ও নদের পাড়ে ফাটলের সৃষ্টি হয়। শহরের অম্বিকাপুর পল্লী কবি জসীমউদদীনের বাড়ীর কাছ থেকে লক্ষীপুর চুনাঘাটা ব্রীজ পর্যন্ত পাকা সড়কটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরিবাঁধের উপর নির্মিত। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, বসত বাড়ী ধসে যাওয়ার খবর পেলে সেখানে এক কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা জানান, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। সরকারী ভাবে তাদের আর্থিক সহযোগীতা করা হবে। ঝুঁিকপূর্ন ভাবে থাকা পরিবার গুলোকে অন্যত্র সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
