কামরুজ্জামান সোহেল।
ফরিদপুরে পাষন্ড স্বামীর দেয়া আগুনে অগ্নিদগ্ধ জোসনা ৭ দিন চরম যন্ত্রনায় ভুগে অবশেষে চিকিৎসাধীন আবস্থায় মৃত্যুবরন করলেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারি হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গৃহবধু জোসনা বেগম (২২) মারা যান। মৃত্যুর পর লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপসাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ফরিদপুর থানায় মামলা হলেও পুলিশ কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি।
জোসনার ভাই জলিল শেখ জানান, গত দেড় বছর আগে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের ঘোরাদাহ গ্রামের লতিফ মোল্যার পুত্র রাশেদ মোল্যার সাথে জোসনার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ ৫০ হাজার টাকা, সোয়া ভরি স্বর্ণ যৌতুক হিসেবে দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আমার বোনকে অত্যাচার করতে থাকে রাশেদ। মাস ছয়েক আগে এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া লাগলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিটমাট করে দেন। এরপরও বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালাতে থাকে রাশেদ এবং তার ভাইসহ পরিবারের সবাই। রাশেদ ফের বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য স্ত্রী জোসনাকে চাপ দেয়। টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে জোসনার উপর নেমে আসে চরম নির্যাতন। ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্বামী রাশেদ মোল্যা ও তার ভাই হাসিব মোল্যা কেরোসিন ঢেলে জোসনার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। জোসনার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে ওইদিন বিকালে অগ্নিদগ্ধ জোসনাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ৭ দিন অগ্নিদগ্ধ জোসনা অসহ্য যন্ত্রনায় ভুগে অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে মারা যায়। জোসনা কৈজুরী ইউনিয়নের ঘোড়াদাহ গ্রামের রাশেদ মোল্যার স্ত্রী ও পার্শ্ববর্তী চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের খলিল ম-ল হাট এলাকার আবদুস ছালাম শেখের মেয়ে। এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, জোসনা মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। আমরা আসামী ধরতে সর্বাত্বক চেষ্টা চালাচ্ছি।
