অপরাধ মধুখালী

মধুখালীতে খুনের আসামীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় সিদ্দিকের স্বজনেরা

কামরুজ্জামান সোহেল।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কোড়কদি ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের সিদ্দিক মোল্যা খুনের সাথে জড়িত আসামীদের অব্যাহত হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষিরা। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকিসহ গ্রাম থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে আসামীপক্ষের হুমকির কারনে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এদিকে, সিদ্দিক মোল্যা খুনের ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। গত ২ জুলাই মধুখালী উপজেলার কোড়কদি ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের সিদ্দিক মোল্যাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় মধুখালী থানায় একটি মামলা হলেও পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।

নিহতের ছেলে কামরুল মোল্যা, মেয়ে আসমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, তাদের বাবা সিদ্দিক মোল্যার সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল লাল খান গংদের। বিরোধের জের ধরে লাল খান, মতিয়ার রহমান খানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তারা আমার বাবা-ভাইদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা বাবাকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে। এ ঘটনার পর মধুখালী থানায় ৬০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। হত্যা মামলা দায়ের করার পর থেকেই প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে আসামীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরে আসামীরা প্রকাশ্যে থেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে গ্রামছাড়া করারও হুমকি দিচ্ছে। রাতের বেলা আসামী ও তাদের স্বজনেরা বাড়ীতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বোনদের এসিড মেরে ঝলসে দেবার হুমকি দিয়েছে। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতার কারনে গ্রাম ছেড়ে রাতের বেলা অন্যত্র থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। নিহতের স্বজনেরা অভিযোগ করেন, মামলার অন্যতম আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরলেও পুলিশ তাদের আটক করছেনা। পুলিশের সাথে আসামীদের সখ্যতা থাকার কারনেই তারা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাদের বাড়ীতে হামলা করে ভাংচুর ও লুটতরাজ করেছে। আমাদের বৃদ্ধা মাকেও মারপিট করে আহত করেছে। আমরা অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। হামলার ভয়ে রাতের বেলা বাড়ী ছেড়ে অন্যত্র থাকতে হচ্ছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবাকে খুন করার পর উল্টো আমাদের পক্ষের লোকজনকে পুলিশ নানাভাবে হয়রানী করছে। সোহেল নামে আমাদের একজনকে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। তাকে থানায় আটকে রেখে রাত থেকে শুরু করে সকাল পর্যন্ত মারধোর করে এবং আদালতে তাদের শেখানো কথা বলতে বলা হয়। থানায় তার সাথে দেখা করতে গেলে সে আমাদের জানায়, রাতভর মারপিট করে পুলিশ খুনের অন্যতম আসামীদের বাঁচাতে তারা খুনের সাথে জড়িত নন বলে তার কাছ থেকে কথা আদায় করার চেষ্টা করেন। কাটাখালী গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সিদ্দিক খুনের পর গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে লাল খান, মতিয়ার রহমান খানের অনুসারীরা। দিনের বেলা তারা একযোগে পাহারা বসায়। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দলবেঁধে ঘোরাফেরা করে। খুনের মামলার সাক্ষিরা যাতে কোন সাক্ষি দিতে না পারে সেজন্য প্রতিনিয়ত ভয় দেখানো হচ্ছে।
বাদীপক্ষের নানা অভিযোগ সর্ম্পকে মধুখালী থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামীদের কাউকেই আটক করা যায়নি। মামলার বাদীরা নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তারা আমাদের কাছে কোন অভিযোগ দেয়নি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *