ভাঙ্গা

ভাঙ্গায় বিক্ষোভের মুখে সরকারী বরাদ্দের দোকান নির্মাণের কাজ বন্ধ

বিশেষ প্রতিবেদক ।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভার ভাঙ্গা বাজারের থানা রোড সংলগ্ন সরকারি ৫৫ শতাংশ জমি ৮৪ জন ব্যক্তির মধ্যে দোকান নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বিক্ষোভের কারণে বন্ধ করে দিল প্রশাসন। ভাঙ্গা থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে সেখান থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেন। এদিকে, দোকান বরাদ্দের বিপক্ষে ভাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরকারি জমিতে দোকান বরাদ্দের অনিয়মের অভিযোগ এনে স্থানীয়রা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে শ্লোগান দেওয়া হয় ‘দোকান বরাদ্দের অনিয়ম মানবো না মানবো না, ইউএনও’র দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, এসিল্যান্ডের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে।’ মিছিলের নেতৃত্ব দেন ভাঙ্গার আলগী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ম.ম. সিদ্দিক, ভাঙ্গা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেব আলী মাতুব্বর, ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকী মাতুব্বর, ভাঙ্গা পৌরসভার কলেজ পাড়ের বাসিন্দা মিয়ান মোঃ আকরাম হোসেন প্রমুখ।
আলগী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ম.ম. সিদ্দিক বলেন, দোকান নির্মাণের জন্য অনিয়মের মাধ্যমে জমি বরাদ্দ দিয়েছে প্রশাসন। অনেকেই আবেদন করেছে। কিন্তু প্রকৃত যারা পাওয়ার যোগ্য তারা পায় নি।
ঐ জমিতে দীর্ঘদিন কাঠের ব্যবসা করতেন ভাঙ্গার কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কাঠের ব্যবসা করে সংসার চালাতাম। আমি আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আমাকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকী মাতুব্বর বলেন, জমি বরাদ্দের জন্য দেড় হাজারের অধিক আবেদন করেছে। লটারির মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দোকান বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসন জমি বরাদ্দের স্বচ্ছতার কোন পরিচয় দেয়নি। কোন প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ হল তাও আবেদন কারিরা জানলো না।
এদিকে, ২০০৯ সালে জনৈক নুর হোসেন মোল্যা একটি দেওয়ানী মামলা করেন। সেই মামলায় উপজেলা ভুমি কর্মকর্তার প্রতি সমন জারী করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে নুর হোসেন মোল্যা গংদেরও কোন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
ভাঙ্গা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আল-আমিন জানান, এটি সরকারি জমি। আগে কিছু অবৈধ দখলদার ছিল। পাশের মাদ্রাসারা নামে কিছু জমি লিজ দেওয়া ছিল। আমরা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আবেদন নেই। আবেদন যাচাই বাছাই করে ভাঙ্গার বাসিন্দা ও প্রকৃত ব্যবসায়ী ৮৪ জনকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দোকান নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ দেই। মাদ্রাসার নামেও জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি।
দুপুরে ভাঙ্গায় আসেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ডিডিএলজি মোঃ মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি কাজ বন্ধ করতে এসেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঐ জমিতে দোকান নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, ভাঙ্গা বাজারে ৫৫ শতাংশ খাস জমিতে ১০টি কাঠের দোকান ছিল। পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসার নামে কিছু জমি লিজ দেওয়া ছিল ও একটি বড় গর্ত ছিল। প্রশাসন ঐ জমি দখল মুক্ত করেন । স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করেন। গত বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রশাসন ৮৪ জনের মধ্যে ঐ জমি বরাদ্দ দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *