বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের নগরকান্দার চরযশোরদী ইউনিয়নের চাদহাট এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে জনৈক দুলাল মোল্লার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও কুপিয়ে একজনকে মারাত্বক ভাবে আহত করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। বৃহস্পতিবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। হামলায় মারাত্বক ভাবে আহত রোজিনা বেগম নামের এক নারীকে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে জানা গেছে, চাদহাট বাজার এলাকার জনৈক দুলাল মোল্লার সাথে পাশ^বর্তী জাহাঙ্গীর আলমের সাথে জায়গা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে একাধিকবার হামলা, পাল্টা হামলার ও মামলার ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি জাহাঙ্গীর আলম বিরোধপূর্ন জমিতে ঘর তুলতে গেলে বাঁধা প্রদান করে দুলাল মোল্লা। পরবর্তীতে দুলাল মোল্লা আদালত থেকে বিরোধপূর্ন জায়গায় ঘর যাতে তুলতে না পারে সেজন্য নিষেধাজ্ঞা জারী করে। কিন্তু জাহাঙ্গীর আদালদের নির্দেশ অমান্য করে কয়েকদিন ধরে ঘর তোলার কাজ শুরু করে। এতে দুলাল বাঁধা প্রদান করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনার চলাকালে বৃহস্পতিবার সকালে জাহাঙ্গীর আলমের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে দুলাল মোল্লার বাড়ীতে। এসময় তারা দুলাল মোল্লার স্ত্রীকে কুপিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা ঘরের বিভিন্ন মালামাল নির্বিচারে ভাংচুর করে। তারা ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র, নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুট করে নিয়ে যায়। হামলার সময় দুলাল মোল্লার স্ত্রী ছাড়া কেউ বাড়ীতে ছিলেন না। হামলার দুলালের স্ত্রী রোজিনা বেগমকে মাথায় ছ্যান দিয়ে কুপিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করা হয়। তার মাথায় ১৬টি সেলাই দেয়া হয়েছে। রোজিনা বেগম বর্তমানে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ ঘটনার পর নগরকান্দা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
দুলাল মোল্লা জানান, বিরোদপূর্ন জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও জাহাঙ্গীরের লোকজন পাকা ঘর তোলার কাজ করছিল। এতে বাঁধা প্রদান করা হলে তারা হামলা চালায়। দুলাল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা ১৩ ভরি স্বর্নালংকার, জমি বিক্রির ৫ লাখ টাকাসহ মূল্যবান আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া তারা বাড়ীর মালামাল ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে।
জাহাঙ্গীর আলম পলাতক থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ থাকায় তার প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
চরযশোরদী ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান পথিক জানান, দুইপক্ষকে শান্ত থাকা এবং আদালতের নির্দেশ মানার কথা বলা হলেও তা না মেনে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে, দুইপক্ষের মাঝে যাতে আর কোন ঝামেলা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছি।
নগরকান্দা থানার ওসি শেখ মোঃ সোহেল রানা জানান, হামলার ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
