বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার সদর হাটে দীর্ঘদিন ধরে গলাকাটা হারে টোল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাটে উপজেলার কৃষক ও গৃহস্থরা উৎপাদিত খাদ্যশষ্য সহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করতে গিয়ে সরকার নির্ধারিত টোল মূল্যের চেয়ে প্রায় চারগুন অতিরিক্ত অর্থ গচ্ছা দিচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন হাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা এবং মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়কারী কর্মীদের অসদাচরণের শিকার হয়ে হাট বিমূখ হচ্ছেন জনসাধারন।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোতালেব হোসেন মোল্যা হাটের বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করে ক্রেতা বিক্রেতাদের সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে অতিরিক্ত টোল পরিশোধ করতে নিষেধ করেছেন এবং হাট ইজারাদারকে ডেকে নিয়ে সতর্ক করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, চরভদ্রাসন উপজেলা সদর হাটে প্রায় এক হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী উক্ত হাটে কোথাও টোল তালিকা প্রদর্শন করা হয়নি। হাটের মূল ইজারাদার প্রতিটি মালের বাজার পৃথকভাবে সাবলীজ প্রদান করেছেন। সাবলীজ গ্রহিতারা পৃথক মালামাল বাজারে টোল আদায়ের জন্য বিভিন্ন লোক নিয়োগ দিয়েছেন। তারা সরকারি নীতিমালা বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে নিজেদের মনগড়া হারে টোল আদায় করে চলেছেন। হাটের পেঁয়াজ, বসুন, আলু ও মরিচ বাজারে কুইন্টাল প্রতি সরকার নির্ধারিত ১৬ টাকার স্থলে টোল আদায় করা হচ্ছে ৬০ টাকা, ধানের চারা বস্তা প্রতি ১০ টাকার স্থলে আদায় হচ্ছে ৮০ টাকা, সব্জি কুইন্টাল প্রতি ৮ টাকার স্থলে গৃহস্থ মাত্র একটি লাউ দোকানে টোল দিতে হচ্ছে ১০ টাকা, তোহা বাজারের কৃষকরা কিছু বড়ই বিক্রি করতে এসে প্রতিজনকে টোল দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা, খেজুর গুড় বিক্রেতাকে টোল দিতে হচ্ছে ১৫০ টাকা, পশুহাটে মুরগীতে টোল শতকরা ১০ টাকা, ছাগলের টোল হাজারে ১০০ টাকা, গরুতে হাজারে ৫০ টাকা, ফুটপাতের দোকানে শুধু চট বিছানোর জন্য ২০ টাকা ছাড়াও পৃথকভাবে মালামালের টোল আদায় হচ্ছে। এছাড়া ক্রেতা ও বিক্রেতা দুইজনের কাছ থেকে আমদানী-রফতানী খাজনার অজুহাত দিয়ে প্রতিটি বিক্রিত মালামালের বিপরীতে দুই দফায় টোল আদায় করা হচ্ছে। একই সাথে হাটে মালামাল বহনকারী প্রতিটি গাড়ী থেকে ২০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলেও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন।
এ ব্যপারে হাট ইজারাদার মোঃ আসলাম মোল্যা জানায়, হাটে বিগত বছরগুলোতে যে হারে খাজনা আদায় করা হচ্ছিল আমি তার বেশী টোল আদায় করি নাই। আমি হাট ইজারা নেওয়ার পর বিভিন্ন মালামাল হাটা সাবলীজ দিয়েছি, তাই অতিরিক্ত টোল আদায় বা গাড়ী প্রতি চাঁদা আদায়ের বিষয়গুলো আমি নিজেই জানি না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা ইজারাদারকে তিন দিনের মধ্যে হাটে টোল চার্ট টানানোর কথা বলেন এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে টোল আদায় করা হলে ইজারা বাতিল করা হবে বলে হুশিয়ার করেন।
