ফরিদপুরের সংবাদ

সালথায় আ.লীগের দুই দল সমর্থকদের মধ্যে দফায় সংঘর্ষ, আহত-২০

বিশেষ প্রতিবেদক #
ফরিদপুরের সালথা আওয়ামী লীগের দুই দল সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০জন আহত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ছয়টা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামে। পরে সালথা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফসলী জমিতে সাড়ে তিন ঘন্টাব্যাপী এ ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার কারনে বেশ কয়েক একর জমিতে রোপন করা পেয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মো. ওয়াহিদুজ্জামান। পরবর্তিতে ২০১৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি আ.লীগের একটি অংশকে নেতৃত্ব দেন। ওপরদিকে মো. এনায়েত এর শ্বশুর ভাওয়াল ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ওহাব মাতুব্বর। এলাকায় ওহাব মাতুব্বরের দলকে নিয়ন্ত্রণ করেন এনায়েত।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউসুফদিয়া গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওহিদুজ্জামানের সাথে মো. এনায়েতের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
এ বিরোধের সুত্র ধরে গত মঙ্গলবার রাত ৮ টা দিকে এনায়েত সমর্থক মো. নুর আলম ও মো. লিটনের সাথে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামানের চাচাতো ভাই শাহিন মোল্লার ইউসুফদিয়া বাজারে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ হাতাহাতির খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুইদলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই দুই পক্ষ বিভিন্ন ধরণের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়া শুরু করে। পরে খবর পেয়ে সালথা থানার পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ফলে গত মঙ্গলবার রাতে কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
তবে ওই উত্তেজনার জের ধরে বুধবার সকাল ৬টার দিকে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র, ঢাল, সরকি, রামদা, ছেনদা, ইট, পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এক পক্ষ আরেক পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের দুই পক্ষের ইট নিক্ষেপ ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।
আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ইউসুফদিয়া গ্রামের মো. বিলায়েত টুকু আমার দলে মিশায় তাকে ইউসুফদিয়া বাজারে ওহিদ চেয়ারম্যানের চাচতো ভাই শাহিন মোল্লা কুটক্তি করে কথা বললে, প্রতিবাদ করেন তারই ছেলে লিটন। এর প্রতিবাদ করাতে ওহিদুজ্জামানের সমর্থকরা আমার সমর্থকদের উপর হামলা চালালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান বলেন, বিএনপির ও জামায়াতের ঘরোয়া লোক এনায়েত ও তার ভাই হেমায়েত হোসেন, এখন আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। ওদের লোকজন সবসময়ই উগ্র আমার লোকদের দেখলেই বিভিন্ন আজেবাজে কথা বলেন। গতকাল ইউসুফদিয়া বাজারে আমার চাচাতো ভাই শাহিন বসা ছিলো হঠাৎ এনায়েতের লোকজন শাহিনের উপর হামলা করে। খবর পেয়ে আমার লোকজন জমায়েত হয়।
সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এলাকা এখন শান্ত রয়েছে, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *