বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জানদি গ্রামে দাদীর কাছ থেকে নাতিকে ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় দুইজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। এর মধ্যে শিশুটির ফুপিকে ভাঙা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে পুলিশের যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, জানদি গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মাসুদ মিয়া ১০ বছর আগে মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার ফজলু মাতুব্বরের মেয়ে নিশি আক্তারকে বিয়ে করে। সন্তান জন্মের পর মাসুদ কুয়েত চলে যায়। মাসুদ-নিশির সংসারে ৮ বছরের নুর মোহাম্মদ ওরফে নুর নামের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। মাসুদ কুয়েত চলে যাবার পর নিশি আক্তার পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। দেড় বছর আগে পরকীয়া প্রেমিকার হাত ধরে শিশু সন্তান নুর মোহাম্মদকে ছেড়ে চলে যায়। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে শিশু নুর মোহাম্মদ তার দাদী নুরুননাহার এর কাছে থাকতো। গত শুক্রবার নিশি আক্তার তার কয়েক স্বজন ও ভাঙা থানার দুই পুলিশকে নিয়ে মাসুদ মিয়ার বাড়ীতে যায়। এসময় তারা শিশু নুর মোহাম্মদকে জোরপূর্বক তুলে নেবার চেষ্টা করে। এতে শিশুটির দাদী নুরুননাহার ও ফুপি সেলিনা বেগম বাধা প্রদান করে। শিশু নুর মোহাম্মদও দাদীকে জড়িয়ে ধরে কাদতে থাকে। এসময় জোরপূর্বক ভাবে শিশু নুর মোহাম্মদকে ছিনিয়ে নিতে না পেরে নিশি আক্তার ও তার সাথে যাওয়া ভাঙা থানার এসআই শহিদুল্লাহ ও কনস্টেবল ইসমাইল হোসেন শিশুটির দাদী ও ফুপিকে মারধোর করে। একপর্যায়ে গ্রামবাসী এগিয়ে আসলে নিশি আক্তার ও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এসময় আহত অবস্থায় শিশুটির ফুপি সেলিনা বেগমকে ভাঙা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শিশুটির দাদী নুরুননাহার জানান, দেগ বছর আগে তার ছেলের বৌ আরেকজনের সাথে চলে যায়। তখন থেকেই নাতি নুর মোহাম্মদ তাদের কাছে থাকতো। হাসপাতালে ভর্তি সেলিনা বেগম জানান, তার ভাইয়ের বৌ পরকীয়া করে পাশর্^বর্তী চাড়ালদিয়া গ্রামের সাদ্দাম নামের একজনের সাথে চলে যায়। সে আর কখনোই তার শিশু সন্তানের খোঁজ নেননি। হঠাৎ করে নিশি তাদের বাড়ীতে লোকজন নিয়ে এসে শিশুটিকে জোর করে নেবার চেষ্টা করে। এতে তারা বাধা দিলে তাকে মারপিট করা হয়। পুলিশ সদস্যরা তাকে মারধোর করে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভাঙা থানার এসআই শহিদুল্লাহর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে, এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নিশি নামের এক নারীর শিশু পুত্রকে আটকে রাখা হয়েছে এ মর্মে পুলিশের কাছে অভিযোগ আসলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু সেখানে শিশুটির দাদী ও স্বজনেরা বাধা দিলে পুলিশ চলে আসে। পুলিশের মারপিটের ঘটনার যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
