বিশেষ প্রতিবেদক।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ধলার মোড় এলাকায় পদ্মার চর থেকে অবৈধভাবে বালু কাটার মহোৎসব চলছে। দীর্ঘদিন ধরে দিনে ও রাতে বালু ও মাটি কাটার কারনে হুমকির মুখে পড়েছে শহররক্ষা বাঁধ ও বিভিন্ন স্থাপনা। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে অভিযান চালানো হলেও সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয় বালু কাটা। বর্তমানে দিনের বেলার চাইতে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত কয়েকশ ট্রাকে করে বালি নিয়ে বিভিন্ন স্থানে রাখা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ অবৈধ বালু কাটার সাথে জড়িত থাকায় স্থানীয় ভয়ে টু শব্দটিও করতে সাহস পাচ্ছেনা।
স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানায়, এলাকার শের আলী, আজম, রুহুল আমীন, রানাসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে পদ্মার তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। রাতে ভেকু দিয়ে তারা বালু ও মাটি কেটে ট্রাকে করে তা বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করছে। অনেক সময় বালু ও মাটি শহরের কয়েকটি স্তুপ আকারে রাখা হচ্ছে। পদ্মার তীর থেকে কাটা মাটি বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মার তীরবর্তী শহররক্ষা বাঁধের একাধিক স্থান থেকে বালু ও মাটি কাটছে প্রভাবশালীরা। ফলে শহররক্ষা বাঁধটি রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার বাঁধ ধ্বসে যেতে পারে। তাছাড়া নদী শাষন করতে কয়েক কোটি টাকা ব্যায়ে বসানো পাথরের ব্লক গুলোও নদীগর্ভে বিলিন হবে। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয়রা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা দিলেও প্রকাশ্যে তারা কোন কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না প্রভাবশালীদের কারনে। নদীপাড় থেকে বালু ও মাটি কাটা বন্ধে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। এদিকে, বালু কাটার সাথে জড়িত জনৈক রুহুল আমীন জানান, আমি বালু কিংবা মাটি কাটিনা। আমি একজন ট্রাক ড্রাইভার, ভাড়ায় ট্রাক চালাই। যখন যার প্রয়োজন তখন তাদের কাজ করি। মাটিকাটার সাথে জড়িত আজমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঐ এলাকায় তাদের পৈত্তিক সম্পত্তি রয়েছে। নদী ভাঙ্গনের কারনে সেই জায়গাটি বিলিন হয়। বর্তমানে সেখানে চর পড়েছে। সেই চর থেকে বালু কাটা হচ্ছে।
মাটি ও বালু উত্তোলনের বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী জানান , অবৈধভাবে মাটি ও বালু কাটার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুতই এ বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হবে। অবৈধভাবে কাউকে বালু ও মাটি কাটতে দেওয়া হবেনা।
