বিশেষ প্রতিবেদক
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হলেন সাবেক ছাত্রনেতা, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া। ৬ মে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বেলায়েত হোসেন মিয়া সরকারী চাকুরীতে যোগদান করার কারনে দলের সাধারণ সম্পাদক ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই শূন্য পদে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়াকে পরবর্তী সম্মেলনের পূর্ব পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হলো। অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়াকে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করায় এলাকার মানুষের মাঝে বেশ আনন্দ-উচ্ছাস লক্ষ্য করা গেছে। জামাল হোসেন মিয়াকে নতুন এ দায়িত্ব প্রদানের খবর এলাকায় পৌছালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করে। এসময় তাদের মিষ্টি বিতরন করতে দেখা যায়। দলের অনেক নেতা-কর্মী জামাল হোসেন মিয়াকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের বীরমুক্তিযোদ্ধা ও তালমা ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু শহীদ মিয়ার পুত্র অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন মিয়া কলেজে পড়াকালীন সময় থেকেই ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। এসময় তিনি সরকারী রাজেন্দ্র বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজের জিএস নির্বাচিত হন। রাজনীতি করতে গিয়ে ছাত্র অবস্থায় নানা ষড়যন্ত্র ও মামলা হামলার শিকার হন। এরপর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে তাকে কেউ সরাতে পারেনি। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সব সময় সক্রিয় থাকা এবং বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রভাবে থাকার কারনে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের নজর কাড়েন। ফলস্বরুপ তাকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য করা হয়। ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেছেন । নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী রাজনীতির সাথে ওতপ্রোত ভাবে থাকার কারনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষনা উপ কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তরুন নেতা হিসাবে ফরিদপুর-২ আসনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে জামাল হোসেন মিয়ার। সুখে-দুখে এলাকার মানুষের সাথে বেশ সখ্যতা রয়েছে তার। তার কাছে গিয়ে কেউ কখনো খালী হাতে ফেরেননি। বিপদের দিনে দলীয় নেতা-কর্মীদের সব সময় পাশে ছিলেন তিনি। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আস্থাভাজন থাকায় তাকে এপিএসের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দলের দুঃসময়ে এবং বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে জনসভা-বৈঠক করতে জামাল হোসেন মিয়ার সাহসী ভূমিকা এখনো সবার মুখে মুখে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স করা জামাল হোসেন মিয়া ফরিদপুর-২ আসনে একজন জনপ্রিয় নেতার নাম। রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন্ সামাজিক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে তার অসমান্য অবদান রয়েছে। ফল স্বরুপ তিনি ফরিদপুরের শেখ জামাল ক্রীড়া চক্রের সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়া শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) এর সদস, ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স এর সদস্য, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট এর আজীবন সদস্য, শিল্পকলা একাডেমীর সদস্যসহ একাধিক প্রতিষ্টানের সাথে যুক্ত রয়েছেন। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শূণ্য হওয়া ফরিদপুর-২ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চান জামাল হোসেন মিয়া। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতারা মিলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান জামাল হোসেনকে মনোনয়ন দেবার। ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকায় সে উপ নির্বাচনে জামাল হোসেন মিয়া বিপুল ভোটে নির্বাচিত হতেন। কিন্তু আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকদের অনুরোধে জামাল হোসেন মিয়া তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে দলের আনুগত্য থাকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এ প্রসংগে জামাল হোসেন মিয়া বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তাই আমি মাথা পেতে নিয়েছি। নির্বাচনে আমি বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও বিপুল ভোটে বিজয়ী হতাম। কিন্তু আমি নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল, দলের প্রতি আনুগত্য থাকায় কোন লোভে পড়ে নিজেকে বিলিয়ে দেইনি। আমি সততার সাথে রাজনীতি করি, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছি। জননেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার সবোর্চ্চ চেষ্টা করেছি। আগামীতেও করে যাবো। দল আমাকে মূল্যায় করেছে এজন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সভাপতি শামীম হক, সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফসহ সকল নেতৃবৃন্দকে আমার পক্ষ থেকে নগরকান্দাবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পাবার পর দলের সবাইকে নিয়ে কাজ করে যাবো। যাতে করে ফরিদপুর-২ আসনে আগামী জাতীয় সংষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হতে পারে।
